২০২৪
26 বার পড়া হয়েছে
ভারতের আগরতলার ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া এ ঘটনায় আরও অন্তত সাতজনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (০৩ ডিসেম্বর) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার ভারতের আগরতলার ত্রিপুরায় নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। এ সময় সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ও জাতীয় পতাকা টাঙানোর খুঁটি ফেলে দেয় এবং পতাকার অবমাননা করে। এ ঘটনায় ত্রিপুরা পুলিশ সাতজনকে আটক করেছে। এছাড়া তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, এ ঘটনায় কমপ্লেক্সে অতিরিক্ত নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছে এবং সহিংসতা এড়াতে মোবাইল পেট্রোল বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিনজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- সাব-ইনসপেক্টর দিলু জমাতিয়া ও জয়নাল হোসাইন এবং সার্জেন্ট দেবব্রত সিংহ।
মঙ্গলবার পুলিশের এক সিনিয়র কর্মকর্তা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, এ ঘটনায় নিউ ক্যাপিটাল কপপ্লেক্স পুলিশ স্টেশনে একটি মামলা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ভারতের ন্যয় সংহিতা (বিএনএস) ধারায় হামলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার দুপুরে হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সমর্থকরা বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায়। পরে তারা বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে। এরপর হিন্দুত্ববাদীরা ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে ভারত সরকারের কাছে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্য চূড়ান্তভাবে প্রমাণ করে, বিক্ষোভকারীদের পূর্বপরিকল্পিত উপায়ে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে প্রাঙ্গণে আগ্রাসনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে, সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন ও চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার বিক্ষোভ সমাবেশ ডাকে আগরতলার হিন্দুত্ববাদী ওই সমিতি। আগরতলা সার্কিট হাউসে অবস্থিত গান্ধী মূর্তির সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ছয়জনের একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে গিয়ে স্মারকলিপি দেয়। একপর্যায়ে সমিতির সদস্যরা সহকারী হাইকমিশনের ভেতরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা নামিয়ে ফেলে এবং সেই
পতাকা ছিঁড়ে আগুন দেয়। এরপর ভবনের সামনে থাকা সাইনবোর্ড ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয় হিন্দুত্ববাদীরা।
আগরতলার একটি সূত্র জানায়, একই সঙ্গে সীমান্ত সংলগ্ন ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে যুব কংগ্রেসের তরফ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়েছে। তবে দুই জায়গাতেই গতকাল সন্ধ্যায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানায় একাধিক সূত্র।
এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ভাঙচুরের ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। কোনো অবস্থাতেই কূটনৈতিক এবং কনস্যুলার সম্পত্তি লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এমন অবস্থায় নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্য ডেপুটি/সহকারী হাইকমিশনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে।