২০২৪
14 বার পড়া হয়েছে
ভারত মহাসাগরে ফ্রান্স নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল মায়োত্তেতে ঘূর্ণিঝড় চিডোর তাণ্ডবে মৃতের সংখ্যা কয়েকশো, এমনকি হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে এই ঘূর্ণিঝড়। এতে পুরো এলাকাগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে ১১ জন ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে স্থানীয় কর্মকর্তা ফ্রাসোয়া-জাভিয়ের বিয়ুভিল বলেছেন, উদ্ধারকাজ শেষে ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ চিত্র পর্যালোচনার আগে সঠিক সংখ্যা বলা যাচ্ছে না। তবে সংখ্যাটি কয়েকশ, এমনকি কয়েক হাজারও হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তিনি।
গুরুতর প্রাণহানির আশঙ্কা প্রকাশ করে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেতাইও জানিয়েছেন, মায়োত্তের সব অস্থায়ী ঘরবাড়ি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণের জন্য ২৫০ জন কর্মী পাঠানোর কথা জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেছেন, ফ্রান্স সবসময় মায়োত্তের জনগণের পাশে থাকবে।
হাসপাতালের তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার এক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ১১ জন নিহত ও ২৪৬ জন আহত হয়েছেন। আর একজন নিরাপত্তা কর্মীর বরাতে এএফপি জানিয়েছে, নিহতের সংখ্যা ১৪তে পৌঁছেছে বলে উল্লেখ করা হয়।
মাদাগাস্কারের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত মায়োত্তে দ্বীপপুঞ্জের প্রায় ৩ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশই টিনের ছাউনি দেওয়া অস্থায়ী ঘরে বাস করেন। ঘূর্ণিঝড়ে কয়েক হাজার মানুষ তাদের ঘরবাড়ি হারিয়েছেন।
দুর্যোগে সেখানকার বৈদ্যুতিক সংযোগ, পানি সরবরাহ ও ইন্টারনেট ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। প্যারিস থেকে একটি সামরিক পরিবহন উড়োজাহাজে করে ত্রাণসামগ্রী ও উদ্ধারকর্মীদের মায়োত্তেতে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার সকালে ঘূর্ণিঝড় চিডো পূর্ণ শক্তিতে আঘাত হানার আগেই গাছ উপড়ে পড়া, বাড়ির ছাদ উড়ে যাওয়া ও বিদ্যুৎ লাইন ছিঁড়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।
মায়োত্তের দমকল বাহিনীর ইউনিয়নের প্রধান আবদুল করিম আহমেদ আলাউই ফরাসি সংবাদমাধ্যম বিএফএমকে বলেছেন, জরুরি উদ্ধারকর্মীরাই জরুরি অবস্থায় পড়েছেন! মোবাইল সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় দ্বীপের বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভূমিকম্প প্রতিরোধী ভবনও চিডোর তাণ্ডব সহ্য করতে পারেনি।
মায়োত্তেতে আঘাত হানার একরাতেই মোজাম্বিক চ্যানেল অতিক্রম করে আরও শক্তিশালী হয় ঘূর্ণিঝড় চিডো। উপকূলীয় শহর পেম্বায় ঝড়ো হাওয়াসহ ভারি বৃষ্টি খবর পাওয়া গেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওগুলোতে দেখা গেছে, প্রবল বৃষ্টিতে পেম্বার বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। আর ঝড়ের আঘাতে গাছপালা উপড়ে পড়েছে ও অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ঘূর্ণিঝড়টি স্থলভাগের দিকে সরে আসছে। পার্শ্ববর্তী নাম্পুলা প্রদেশে ভারি বৃষ্টিপাতের খবর পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে পড়লেও এর প্রভাবে মালাওয়ি ও জিম্বাবুয়েতে ভারি বৃষ্টি ও বন্যা হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।