২০২৪
9 বার পড়া হয়েছে
প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আমার বাংলা বইয়ের শেষপাতায় জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার ছবি রাখা হয়েছে। এ নিয়ে নানান প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। সমালোচনা করছেন শিক্ষাবিদরাও।
তারা বলছেন, এর আগে কখনো জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার ছবি বইয়ের শেষে রাখার নজির নেই। সবসময় বইয়ে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার ছবি শুরুতে স্থান পেয়েছে।
হঠাৎ পাঠ্যবইয়ে কেন এমন পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেননি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা কেউই এ বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন। এমনকি বই পরিমার্জন কমিটির সদস্যরাও বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলছেন না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার দেরিতে বই ছাপার কাজ শুরু হয়েছে। তবে প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির বই পুরোদমে ছাপার কাজ চলছে। নতুন ছাপা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’ ঘেঁটে দেখা গেছে, জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকার ছবি প্রতিটি বইয়ের শেষে দেওয়া হয়েছে।
প্রথম শ্রেণির আমার বাংলা বইয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় পৃষ্ঠায় জাতীয় ফুল শাপলা ও গ্রাম বাংলার ইলাস্ট্রেশন রয়েছে। তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ পৃষ্ঠায় সম্পাদনা পর্ষদের তথ্য প্রসঙ্গ কথা ও সূচিপত্রের মতো বিষয়গুলো রয়েছে। এরপর সপ্তম পৃষ্ঠা থেকে বইয়ের মূল পাঠ শুরু। প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা বই এভাবে সাজানো হয়েছে।
বিগত বছরের আমার বাংলা বইয়ে দেখা গেছে, প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির বাংলা বইয়ের প্রচ্ছদের পরে জাতীয় পতাকা নির্মাণের তথ্যসহ ছবি রাখা হয়েছিল। পরের পৃষ্ঠায় জাতীয় সংগীত এবং গাওয়ার জন্য জাতীয় সংগীতের পূর্ণপাঠ ছিল।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলেন, এবার বইয়ে কী পরিবর্তন হয়েছে, কেন হয়েছে; এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং পাঠ্যপুস্তক সংশোধন-পরিমার্জন সমন্বয় কমিটি বলতে পারবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানি না।
এনসিটিবির সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক এ এফ এম সারোয়ার জাহান বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে কথা বলতে পারবো না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যে সমন্বয় কমিটি রয়েছে, তারা সব ধরনের পরিবর্তন ও পরিমার্জনে কাজ করেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বললে ভালো বলতে পারবেন।’
এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘বাংলা বইয়ে এ পরিবর্তন সম্পর্কে ভালো ব্যাখ্যা দিতে পারবেন সমন্বয়ক কমিটির সদস্য লেখক ও শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা।’
জানতে চাইলে সমন্বয়ক কমিটির সদস্য রাখাল রাহা বলেন, প্রতিটি বিষয়ের পরিমার্জন এবং পরিবর্তনের জন্য আলাদা কমিটি কাজ করেছে। এটা আমার একার সিদ্ধান্ত নয়। তবে এর জন্য শিশুদের দেশাত্মবোধ কিংবা আত্মপরিচয়ে কোনো প্রভাব পড়বে বলে আমি মনে করি না।