২০২৪
18 বার পড়া হয়েছে
১৯৬০ সালে মুক্তি পায় বলিউড সিনেমা ‘চৌধভিন কা চাঁদ’। প্রযোজনার পাশাপাশি সিনেমাটির মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করেন গুরু দত্ত। তার বিপরীতে অভিনয় করেন অভিনেত্রী ওয়াহিদা রেহমান। এম. সাদিক নির্মিত এ সিনেমায় দেখা যায় অভিনেতা রেহমানকেও। কিন্তু ওয়াহিদা রেহমানের চোখের কারণে সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডের কাঁচির নিচে পড়েছিল।
বলিউডের বরেণ্য অভিনেত্রী ওয়াহিদা রেহমান ‘জেশন-ই-রেখতা’ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন। তাতে উপস্থিত হয়ে স্মৃতির পাতা খুলেন তিনি। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, “গুরু দত্ত ‘চৌধভি কা চাঁদ’ সিনেমার শুটিং সাদা-কালোয় করেছিলেন। কিন্তু সিনেমাটি মুক্তি দিতে দেরি হয়। ফলে ততদিনে বাজারে রঙিন সিনেমা চলছে। এ কারণে সিনেমাটির টাইটেল সং পুনরায় শুটিং করার সিদ্ধান্ত নেন এবং তা রঙিন ফ্রেমে।”
সাদা-কালো ফ্রেমে সিনেমার শুটিং করার পর আবার নতুন করে সম্পূর্ণ রঙিনভাবে শুট করা সম্ভব ছিল না। তাই প্রযোজক গুরু দত্ত সিদ্ধান্ত নেন, শুধু সিনেমাটির মূল গান রঙিন ফ্রেমে শুট করবেন। নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘চৌধভি কা চাঁদ’ সিনেমার মূল গানের শুটিং করেন গুরু দত্ত।
সিনেমাটির সম্পাদনার কাজ শেষ করার পর সেন্সর বোর্ডে পাঠানো হয়। ওয়াহিদা রেহমান জানান, পুরো সিনেমা দেখে কোনো সংশয় প্রকাশ না করলেও সিনেমার মূল গান নিয়ে আপত্তি জানান সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা।
চৌধভি কা চাঁদ’ সিনেমার মূল গান থেকে দু’টি দৃশ্য কেটে বাদ দিতে বলে সেন্সর বোর্ড। গানের দৃশ্য কেন বাদ দিতে হবে, তা জানতে চান গুরু দত্ত। সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা বলেন, ‘ওই দু’টি দৃশ্যেই ওয়াহিদার চোখ লাল হয়ে আছে। ফলে তাকে অনেক বেশি আবেদনময়ী ও কামুক লাগছে।’ এ কথা শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন গুরু দত্ত।
এরপর সেন্সর বোর্ডকে গুরু দত্ত বলেন, রঙিন ফ্রেমে গানটি শুট করার কারণে সেটে অনেক চড়া আলোর ব্যবহার হয়েছে। আলোর তীব্রতায় শুটিং করতে অসুবিধা হচ্ছিল ওয়াহিদার। তাই শুটিংয়ের ফাঁকে ফাঁকে চোখের ওপর বরফ ঘষছিলেন তিনি। বার বার চোখে বরফ ঘষার ফলে অভিনেত্রী আরাম বোধ করেন। কিন্তু এতে তার চোখ দু’টি লাল হয়ে যায়।
গুরু দত্ত চোখ লাল হওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করার পর সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা বলেন, এই গানে ওয়াহিদার চোখ প্রয়োজনের চেয়েও অতিরিক্ত আবেদনময়ী লাগছে। দর্শক এই বিষয়টি ভালোভাবে গ্রহণ না-ও করতে পারে।’ কিন্তু গুরু দত্ত কিছুতেই হার মানতে রাজি ছিলেন না। তিনি সেন্সর বোর্ডের সদস্যদের বলেন, ‘এই গানটি স্বামী-স্ত্রীর গল্পকে ঘিরে বানানো হয়েছে। তাতেও যদি অভিনেত্রীর চোখ সামান্য আবেদনময়ী গুরু দত্তের এসব ব্যাখ্যা শোনার পর বিশেষ আপত্তি জানাননি সেন্সর বোর্ডের সদস্যরা। কিন্তু দু’টি দৃশ্যের পরিবর্তে একটি দৃশ্য কর্তন করার নির্দেশ দেয় সেন্সর বোর্ড। তারপর মুক্তি পায় সিনেমাটি এবং দর্শকদের দারুণ প্রশংসা কুড়ায় বলেও জানান ওয়া হিদা রেহমান।