সোমবার, ১০ই ফেব্রুয়ারি,
২০২৫

  • সারাদেশ খুলনা

  • ইন্টার্নশিপ করতে ঢাকায় গিয়ে লাশ হয়ে ফেরেন মারুফ


    সোনারদেশ ২৪ ডেস্ক


    সোমবার, ২৯শে জুলাই,

    ২০২৫

    /

    35 বার পড়া হয়েছে


    a

    সোনারদেশ২৪: ডেস্কঃ


    কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় রাজধানীর বনশ্রীতে নিজের ভাড়া বাসার সামনে গুলিতে মারুফ হোসেন (২১) নিহত হন। একমাত্র ছেলের মৃত্যু সংবাদ বাড়িতে আসার পর একবারই চিৎকার করে কেঁদে উঠেছিলেন মা ময়না খাতুন। শোকে পাথর মা এরপর থেকে আর কথা বলতে পারছেন না। কেউ কিছু বললে শুধু তাকিয়ে থাকেন। মারুফের থাকার ঘরে তালা দিয়ে চাবিটা নিজের কাছে রেখেছেন। মাঝে মধ্যে ওই ঘরে গিয়ে টেবিলের পাশে গিয়ে চুপচাপ তিনি দাঁড়িয়ে থাকেন।  

    নিহত মারুফ হোসেন কুষ্টিয়ার খোকসা পৌর এলাকার থানাপাড়ার শরিফুল ইসলামের ছেলে। কুষ্টিয়া পলিটেকনিক্যাল কলেজ থেকে শেষবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে ইন্টার্নশিপ করতে মাত্র ২০ দিন আগে মারুফ রাজধানীতে যান। বন্ধুদের সঙ্গে উঠেছিলেন বনশ্রী এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। গত ১৯ জুলাই দুপুরে ওই বাসার সামনেই তিনি গুলিবিদ্ধ হন। স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ২০ জুলাই সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়। রাতে খোকসা পৌর কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। পুলিশ বাড়িতে এসে খোঁজখবর নিয়ে গেছে বলে জানান বাবা শরিফুল ইসলাম।  

    মারুফের মৃত্যুতে পুরো পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। কাঁচামাল আড়তের শ্রমিক এবং ফুটপাতের খণ্ডকালীন পেয়ারা বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম ঘটনার পর থেকে আর কাজে যাননি। 

    রোববার (২৮ জুলাই) দুপুরে মারুফের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, দুই কক্ষের টিনের ঘরের বারান্দায় মা ময়না খাতুন বসে আছেন। তাকে ঘিরে আছেন প্রতিবেশী নারীরা। তবে তাদের কারও কথায় সাড়া দিচ্ছেন না ময়না খাতুন। কিছুক্ষণ পরপর ছেলের ঘরের তালা খুলে টেবিলের কাছে গিয়ে দাঁড়াচ্ছেন। ছেলের ব্যবহৃত সাইকেল ধরে আপনমনে বলছেন, ‘বাবার সাইকেল। এই সাইকেলেই বাবা (মারুফ) স্কুল করেছে। বাজারে ঘুরতে যেত।’

    ছেলে হত্যার বিচার প্রসঙ্গে ময়না খাতুন বলেন, ‘বিচার করি কি করবেন বলেন? ছেলে তো আমি আর ফিরে পাচ্ছিনে।’ এরপর আর কোনো কথা বলতে পারেননি ময়না খাতুন। মুখে আঁচল চাপা দিয়ে ডুকরে কেঁদে ওঠেন।  

    ভাইয়ের স্মৃতি তাড়া করে ফিরছে একমাত্র বোন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মাইসাকে। সে জানায়, ঢাকায় যাওয়ার পর প্রতিদিন সন্ধ্যায় মাকে ফোন করত মারুফ হোসেন। তার সঙ্গেও কথা বলত। চাকরি পেলেই পছন্দের অনেক খেলনা কিনে দেওয়ার কথা দিয়েছিল। এখন সন্ধ্যা নামলেই ভাইয়ের কথা তার মনে পড়ে। 

    মারুফের বাবা শরিফুল ইসলাম জানান, ১৯ জুলাই বেলা ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে শেষবার কথা হয়। কথা শেষ হওয়ার আগেই লাইন কেটে যায়। আর কথা হয়নি। বিকেল ৫টার পর ছেলের সহপাঠী ফোন দিয়ে মারুফের মৃত্যুর খবর জানায়। তিনি এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন।


    সংবাদটি শেয়ার করুন


    সম্পাদক ও প্রকাশকঃ জিয়াউল হক
    নির্বাহী সম্পাদকঃ মোস্তাক আহম্মেদ নওশাদ


    যোগাযোগ- মুজিব সড়ক, কমিউনিটি হাসপাতাল ৫ তলা, সিরাজগঞ্জ
    ইমেইল- sonardesh24.corr@gmail.com
    মোবাইল : 01324 977 175, 01716-076444




    Copyright © 2025 - All right reserved by Sonar Desh 24 Ltd